Skip to main content

দুধ কেন আদর্শ খাবার? আসুন জেনে নেই।


Dohar model dairy

যেকোনো বিষয়ে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন নমুনাটিই হয় আদর্শ। মানুষের বেলায়, ফুটবল মাঠে আদর্শ পেলে-ম্যারাডোনা, ক্রিকেটে ব্র্যাডম্যান, চিত্রকরদের কাছে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, ভাস্কর হিসেবে মাইকেল এঞ্জেলো, আর বিজ্ঞানী বলতে নিউটন কিংবা আইনস্টাইন। তবে মানুষের কথা চিন্তা করতে গেলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই একাধিক আদর্শ খুঁজে পাওয়া সম্ভব, থাকবে বিতর্কও। আমাদের আজকের আলোচনাটা যেহেতু খাবার নিয়ে, তাই বরং তেমন কিছুর উদাহরণে যাই। পৃথিবীর হাজার হাজার ধরনের বিষয়ে আদর্শ খুঁজে বের করা যাবে, তবে বিতর্কের ব্যাপারটা চলে আসবে প্রায় ক্ষেত্রেই। যেমন- আদর্শ ভ্রমণ গন্তব্য, আদর্শ পোশাক বা ধরুন আদর্শ। এভাবে আদর্শ ঠিক করতে করতে যখন খাবারের বেলায় যাবেন, তখন কিন্তু আদর্শ খাবারের নামটি একশব্দে মাথায় চলে আসবে, দুধ। এতে কোনো দ্বিমত নেই, কোনো বিতর্ক নেই, নেই কোনো প্রতিযোগিতা। আমাদের এই লেখাটা দুধের এমন পুষ্টিগুণের কথা নিয়েই।Dohar model dairy

প্রতিবেলার আহারকে একটি আদর্শ আহারে পরিণত করতে প্রয়োজন হয় ছয়টি পুষ্টি উপাদান- কার্বোহাইড্রেট (শর্করা), প্রোটিন (আমিষ), ফ্যাট (স্নেহ), মিনারেল (খনিজ উপাদান), ভিটামিন ও পানি। বিস্ময়করভাবে দুধে এই ছয়টি উপাদানই বিদ্যমান। মানুষের জন্য প্রকৃতির এই অতুলনীয় উপহার যেন একের ভেতরে সব। প্রতিবার আহারের সময় ছয়টি পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে খাবারের তালিকা করা বা তেমন খাবারের ব্যবস্থা করা কখনোই সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে খাদ্য তালিকায় দুধ অন্তর্ভুক্ত হলেই সব ঝামেলা চুকে যাচ্ছে। আর এজন্যই গুণেমানে অতুলনীয় এই খাদ্যকে বলা হয় পৃথিবীর অমৃত। আমাদের প্রতিদিনের সঙ্গী চা থেকে শুরু করে পনির, মাখন, ঘি, দই, ক্ষীর, ফিরনি সহ শত শত মুখরোচক খাবার তৈরি হয় এই প্রাকৃতিক অমৃত থেকে।

দুধের পুষ্টিগুণ সম্বন্ধে প্রাচীনকালের মানুষও জ্ঞাত ছিল। বহু প্রাচীন পুঁথি আর শাস্ত্রেও পাওয়া যায় দুধের গুণাগুণের বর্ণনা। সেই বর্ণনা যত সময় গড়িয়েছে তত শক্ত ও প্রামাণ্য হয়েছে নানাবিধ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর গবেষণায়। শিশুদের জন্য মায়ের বুকের দুধ আর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য গরু, মহিষ কিংবা ছাগলের দুধ অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য যা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত সত্য। প্রোটিন, ভেজিটেবল ফ্যাট, ভিটামিন আর নানাবিধ খনিজে সমৃদ্ধ এই তরল খাবারের জুড়ি মেলা ভার।

https://assets.roar.media/assets/Hf4gDupJp28KX86A_arla-dano.jpgDohar model dairy

দুধের পুষ্টি উপাদানগুলো প্রতিটিই অত্যন্ত উন্নত মানের। উদাহরণস্বরূপ প্রোটিনের কথাই ধরা যাক। দৈহিক বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য প্রোটিনের পরিমাণ দুধের ৩.৪ শতাংশ। পরিমাণের জন্য নয়, বরং দুধের প্রোটিন এর স্বয়ংসম্পূর্ণতার কারণে মানবদেহের জন্য অপরিহার্য। দেহের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামাইনো এসিডের সবগুলোর উপস্থিতির কারণে একে বলা হয় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোটিন’।

দুধের প্রোটিনের ৭০-৮০ শতাংশই হলো ক্যাসেইন, যাতে বিদ্যমান অ্যামাইনো এসিডগুলো আর কোনো খাবারে পাওয়া যায় না। এতে আরও আছে হোয়ে প্রোটিন যেটি লিউসিন, আইসোলিউসিন, ভ্যালিনের মতো অ্যামাইনো এসিড সমৃদ্ধ। এছাড়াও আছে অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন, ল্যাকটোফেরিন, বোভিন ইত্যাদি প্রোটিনও। আর এই উপাদানগুলোর প্রতিটিই শরীরের গঠন ও বিকাশের জন্য দারুণ উপকারি।

https://assets.roar.media/assets/Hf4gDupJp28KX86A_arla-dano.jpgদুধকে বলা হয় ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোটিন’; Dohar model dairy

দুধের শর্করার পরিমাণও প্রায় প্রোটিনের সমান। প্রচুর পরিমাণে দ্রবীভূত ফাইবার, সুক্রোজ আর ফ্যাট রয়েছে এতে। আর ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজ দ্রব্য এবং ভিটামিনগুলোর উপস্থিতি যথাক্রমে আরডিএ’র ২৮, ১৩ ও ২২ শতাংশ। উল্লেখ্য, আরডিএ বা ‘রিকমেন্ডেড ডায়েটারি অ্যালাউয়েন্স’ হলো মানুষের প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের পরিমিত পরিমাণ। কয়েকটি ভিটামিন এবং খনিজের ক্ষেত্রে কেবল দুধই মোট আরডিএ’র সিংহভাগ পূরণে সক্ষম।

পুষ্টিগুণ বিবেচনায় গরুর বা ছাগলের দুধের চেয়ে এগিয়ে থাকে মহিষের দুধ। সহজলভ্যতায় গরুর দুধ এগিয়ে থাকায় মানুষ সাধারণত এটিই গ্রহণ করছে। তবে শহরাঞ্চলে এখন খাঁটি গরুর দুধ পাওয়াও মুশকিল হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে গো-দুগ্ধের বিকল্প হয়ে উঠছে গুঁড়ো দুধ। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধের মধ্যে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে ডানো, গত ৬ দশক ধরে সারাবিশ্বে দুধ সরবরাহ করা এই ব্র্যান্ডের প্রতি ১ গ্লাস ফুল ক্রীম দুধে থাকে ৭% প্রোটিন, ২৬% ভিটামিন বি২, ২১% ভিটামিন এ, ২৫% ক্যালসিয়াম, ৪২% ভিটামিন বি১২ আর ৫৬% ভিটামিন ডি। অর্থ্যাৎ গুণে, মানে আর পরিমাণে, সব দিক থেকেই প্রাকৃতিক দুধের সমতুল্য প্রায় এই গুঁড়ো দুধ। এছাড়াও ডানোর আরও আছে ফ্যাট ফিলড্ গুঁড়ো দুধ, যাতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভেজিটেবল ফ্যাট, যা একই সাথে স্বাস্থ্যকর এবং স্থূলতার ঝুঁকিমুক্ত। দ্রবীভূত ভিটামিন এ, ডি ও বি এর সমন্বয় একে করে আরও পরিপূর্ণ। আর যথেষ্ট পরিমাণ ল্যাকটোজ ও সুক্রোজের উপস্থিতি এর স্বাদকেও নিয়ে যায় একদম প্রাকৃতিক দুধের কাছাকাছি।

দুধ কেন আদর্শ খাবার, সেকথার ব্যাখ্যায় এর উপাদানগুলো নিয়ে তো জানা হলো। এবারে মানবদেহের জন্য দুধের কী কী উপকারিতা আছে সেসবই এক নজরে দেখে নিই চলুন।

হাড় ও দাঁতের সুরক্ষা

মানবদেহের ৯৯ শতাংশ ক্যালসিয়ামই হাড় ও দাঁতে সংরক্ষিত থাকে। হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় তাই দুধ হতে পারে একটি আদর্শ খাদ্য। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম আর ভিটামিন কে, ডি ও বি এর সমন্বয়ে হাড় ও দাঁতের জন্য দুধ হলো একটি প্রাকৃতিক শক্তিবর্ধক। তাছাড়া হাড়ের ৫০ শতাংশই প্রোটিন দ্বারা গঠিত; দাঁতের এনামেল ক্ষয়রোধেও প্রয়োজন নানা প্রকারের হোয়ে প্রোটিন। এখানেও দুধের বিকল্প নেই, যেটি কিনা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রোটিন। দুধে উপস্থিত ক্যাসেইন দাঁতের এনামেল রক্ষায় অপরিহার্য।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং নানাবিধ হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ভেজিটেবল প্রোটিন, যা কিনা দুধে উপস্থিত। নিয়মিত দুধপান করলে দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং উচ্চমানসম্পন্ন প্রোটিন ও অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ হয় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ

গবেষণা বলছে, যারা চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাদ্যের বদলে নিয়মিত দুগ্ধজাত খাদ্য গ্রহণ করছে, তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক কম। নিয়মিত দুধ পান কিংবা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণে একদিকে যেমন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে, অন্যদিকে দেহে ফ্যাটের অভাবও দেখা দেয় না। কারণ দুধে রয়েছে পরিমিত পরিমাণ ফ্যাট।

https://assets.roar.media/assets/Hf4gDupJp28KX86A_arla-dano.jpgদুধের উপকারিতার যেন শেষ নেই;Dohar model dairy

স্থূলতা রোধ

নিয়মিত দুধ পানে স্থূলতা রোধ হয় বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেক গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক ১৮ হাজার মধ্যবয়স্ক মানুষের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখিয়েছেন
Dohar model dairy


যে, যারা নিয়মিত দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করে, তাদের স্থূলতার ঝুঁকি বা সম্ভাবনা দুটোই অত্যন্ত কম। দুধের পুষ্টি উপাদানগুলোই এক্ষেত্রে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। দুধে উপস্থিত উচ্চমানের প্রোটিন শরীরে প্রচুর শক্তি যোগায়। ফলে দীর্ঘ সময় আর ক্ষুধা অনুভব হয় না এবং প্রাকৃতিকভাবেই অতিরিক্ত আহার কমে যায়। তাছাড়া দুধে উপস্থিত লিনোলেয়িক এসিড ও দ্রবীভূত ক্যালসিয়ামও মেদ কমাতে সহায়তা করে।

তরল দুধ কিংবা দুধ দ্বারা তৈরি নানান পানীয় যেমন বাদাম দুধ, নারকেল দুধ, ওট মিল্ক, রাইস মিল্ক, সয়া মিল্ক, হেম্প মিল্ক, দুধের তৈরি মিষ্টান্ন আর পিঠাপুলি- সবকিছুই দুধের পুষ্টি গুণের কারণে দেহের বিকাশের জন্য আদর্শ। দেহকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি যোগাতে প্রতিদিন দুধ পান করার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুধ কিংবা গুঁড়ো দুধ, দুটোই সমান কার্যকর। উপাদান এবং উপকারিতা দুই দিক থেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ দুধকে কেন লেখার শুরুতে কোনো বিতর্ক ছাড়াই আদর্শ খাবার বলা হয়েছে, এখন নিশ্চয়ই পরিষ্কার?

Comments

Post View

 

ঘি খেলে কী মোটা হয় মানুষ?

  বেশীরভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন যে ঘি খেলে মানুষ মোটা হয়। তাই ওজন কমানোর ডায়েটের কথা এলেই বেশীরভাগ মানুষ তাদের খাদ্যতালিকা থেকে প্রথমেই যে উপাদানটি বাদ দেন তা হচ্ছে ঘি। কিন্তু ঘি খেলে কী আসলেই মানুষ মোটা হয়? এই বিষয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শ জেনে নিই চলুন। ঘি খাওয়া কী ওজন বৃদ্ধির সাথে জড়িত?   ঘি আসলে আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ নয়। এটা সত্য যে, ঘি এ উচ্চমাত্রার ক্যালোরি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। কিন্তু এটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার জন্য উপকারী এবং পরিপাক নালীর স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং ওজন কমতে সাহায্য করে। ঘাস খাওয়া গরু থেকে উৎপন্ন ঘি এ কঞ্জুগেটেড লিনোলেনিক এসিড (CLA) থাকে যা ওজন কমতে সাহায্য করে। ঘি দিয়ে খাবার রান্না করা কী স্বাস্থ্যসম্মত? হ্যাঁ, আপনি রান্না করতে পারেন ঘি দিয়ে। তেলের পরিবর্তে ঘি ব্যবহার করুন। ঘি এর স্মোকিং পয়েন্ট অন্য তেলের চেয়ে বেশি। তাই এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেল উৎপন্ন করেনা। তেল বা চর্বির স্মোকিং পয়েন্ট হচ্ছে তাপমাত্রার সুনির্দিষ্ট অবস্থা যেখানে তেল থেকে ক্রমাগত নীলাভ ধোঁয়া উৎপন্ন হয় যা স্প...

কেন খাবেন মধু? জেনে নিন মধুর এই ৩৩টি উপকারিতা

  কথায় আছে, জন্মের পর প্রথম মুখে মধু দিলে মিষ্টি কথা বলা শেখে শিশুরা। এটা সত্যি নয়, কথার কথা। কিন্তু মধুর যে প্রকৃতই বিশেষ গুণ আছে, সে কথা স্বীকার করতেই হয়। হয়তো মিষ্টি কথা বলানোর গুণ নয়। শরীরের ক্ষেত্রে বিশেষ গুণ। সেই গুণ কিন্তু আবার একটি-দুইটি নয়। অসংখ্য। মধুর সুফল বা উপকারিতা যেমন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে রয়েছে, তেমনই রয়েছে রূপচর্চা ও চুলের যত্নে। তবে প্রথম পর্বে আমরা জানব মধু সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা কিন্তু জরুরি তথ্য। প্রাচীন কাল থেকেই মধুর ব্যবহার দেশে ব্যাপক মাত্রায় হয়ে আসছে। তবে শুধু যে দেশে তাই নয়, বিদেশেও কিন্তু মধুর কদর প্রচুর। চিন-সহ এশিয়ার বহু দেশই সকাল শুরু করে মধুর হাত ধরে। অর্থাৎ প্রাতরাশের তালিকায় থাকে মধু।   অনেকেই গরম জলে মধু, চায়ের সঙ্গে মধু ইত্যাদি নিয়মে নিয়মিত মধু খেয়ে থাকেন। তার উপকারিতা বা সুফলও পান পুরোদমে। সেই সুফলগুলি কী? তা তো অবশ্যই জানতে হবে। তবে তার আগে বলে নেওয়া যেতে পারে বিভিন্ন ফুলের মধু থেকে তৈরি মানুষের খাদ্য এই মধুতে রয়েছে দারুণ খাদ্যগুণ। কী সেই খাদ্যগুণগুলি? মধুতে রয়েছে ৪৫টিরও বেশি খাদ্যগুণ। তার মধ্যে কয়েকটি হল ১। মধুতে থাক...

জেনে নিন ঘি-এর ১০ উপকারিতা

ঘিয়ের বহু গুণের কথা আমরা শুনে থাকলেও স্বাস্থ্য সচেতন, বলা ভাল ওজন সচেতন বর্তমান প্রজন্মের কাছে ঘি ভিলেন। এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল। ঘিয়ের বহু উপকারিতা তো রয়েছেই, ঘি কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে। জেনে নিন কী কী কাজ করে ঘি। ১। স্ফুটনাঙ্ক- ঘি-এর স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি। ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত ঘি গরম করা যায়। অধিকাংশ তেলই এই তাপমাত্রায় গরম করলে ক্ষতিকারক হয়ে যায়। ২। নষ্ট হয় না- ঘি সহজে নষ্ট হয় না। প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে ঘি। ৩। স্বাদ- সুন্দর গন্ধ ও স্বাদ অথচ অধিকাংশ দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো ঘি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ৪। ভিটামিন- ভিটামিন এ ও ই থাকায় ঘি পুষ্টিগুণে ভরপুর। ৫। কনজুগেটেড লিনোলেক অ্যাসিড- এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ রয়েছে। যা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। ডেলিভারির পর নতুন মায়েদের ঘি খাওয়ানো হয় এই কারণেই। ৬। ওজন ও এনার্জি- ঘিয়ের মধ্যে থাকা মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড খুব এনার্জি বাড়ায়। অধিকাংশ অ্যাথলিট দৌড়নোর আগে ঘি খান। এর ফলে ওজনও কমে। ৭। হজম ক্ষমতা- ঘিয়ের মধ্যে রয়েছে বাটাইরিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড হজম ক্ষমতা বাড়ায়। ঘিয়ের বহু গুণের কথা আমরা ...

কালোজিরা ও মধুর উপকারিতা

 ইসলামের দৃষ্টিতে রাসূল (সা.)-এর যুগ থেকেই মুসলমানগণ কালোজিরার ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করে আসছেন। এ ব্যাপারে একটি হাদিস তাদেরকে উৎসাহিত করেছে। হাদিসে এসেছে রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা কালোজিরার ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করো। কেননা তাতে মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের নিরাময় রয়েছে। সহি বুখারি।  কালোজিরার ভেষজ ব্যবহার :  * নিদ্রাহীনতায় : মধু মেশানো এক গ্লাস গরম দুধের সাথে এক চামচ কালোজিরা মিশিয়ে ঘুমের পূর্বে সেবন করতে হবে। এতে করে অনিদ্রা দূর হয়ে প্রচুর ঘুম হবে।  * মাথা ব্যথায় : পরিমাণ মতো কালোজিরার চূর্ণ এবং তার অর্ধেক পরিমাণ গরম লবঙ্গ এবং অর্ধেক পরিমাণ মৌরিফল এক সাথে মিশিয়ে মাথা ব্যথার সময় ননিযুক্ত দুধের সাথে সেবন করতে হবে। আর কালোজিরার তৈল দ্বারা যন্ত্রণার স্থানে ডলে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।  * যৌবন ধরে রাখতে ও লাবণ্যের জন্য : কোমল কালোজিরা পাতলা সিরকা এবং এক চামচ পরিমাণ গমের গুঁড়া মেশাতে হবে। এই মিশ্রণ সন্ধ্যা বেলায় মুখম-লে মালিশ করবে এবং সকালে গরম পানি ও সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলবে। এক সপ্তাহ প্রতিদিন একাধিকবার তা করবে। আরো ভালো ফল পাওয়া যাবে যদি উষ্ণ পানীয় সহযোগে কালোজিরার ...

সকালে মধু খাওয়ার উপকারিতা

  উচ্চ ঔষধি গুণ সম্পন্ন তরল ‘মধুর’ নানা গুণের কথা প্রায় সকলেরই জানা। তবে আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছেও কি এসব ভেষজ ওষুধের গুরুত্ব আছে? জীবনকে মধুময় করতে মধুর খাদ্য উপাদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকালে মধু খেলে ওজন কমে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিষ্কার থাকে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে মধু। কারণ মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠাণ্ডা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়। মধুর সঙ্গে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর সমস্যা দূর করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। মধু ও দারচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।  মধু পেটের অম্লভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারি খাবার খা...

খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা

  জীবনকে মধুময় করতে মধুর খাদ্য উপাদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে লিভার পরিষ্কার থাকে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে মধু। কারণ মধুতে আছে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল, ভিটামিন ও এনজাইম যা শরীরকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু খেলে ঠাণ্ডা, কফ, কাশি ইত্যাদি সমস্যা কমে যায়। মধুর সঙ্গে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে তা রক্তনালীর সমস্যা দূর করে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১০ ভাগ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। মধু ও দারচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।   হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। মধু পেটের অম্লভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারি খাবার খাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে এক চামচ মধু কিন্তু খুবই উপকারী। মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। বিশেষ করে যারা ম...

মৌমাছি পালন ও মধুর উপকারিতা

  মধু মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত এক অপূর্ব নেয়ামত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যাবতীয় রোগ নিরাময়ে মধুর গুণ অপরিসীম। রাসূলুল্লাহ (সা.) একে ‘খাইরুদ্দাওয়া’ বা মহৌষধ বলেছেন। আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রেও মধুকে বলা হয় মহৌষধ। এটা যেমন বলকারক, সুস্বাদু ও উত্তম উপাদেয় খাদ্যনির্যাস, তেমনি নিরাময়ের ব্যবস্থাপত্রও। আর তাই তো খাদ্য ও ওষুধ এ উভয়বিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নির্যাসকে প্রাচীনকাল থেকেই পারিবারিকভাবে ‘পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক’ পানীয় হিসেবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে ব্যবহার করে আসছে। মধুতে যেসব উপকরণ রয়েছে তন্মধ্যে প্রধান উপকরণ সুগার। সুগার বা চিনি আমরা অনেকই এড়িয়ে চলি। কিন্তু মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ এ দুটি সরাসরি মেটাবলাইজড হয়ে যায় এবং ফ্যাট হিসাবে জমা হয় না। মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, এতে অ্যালুমিনিয়াম, বোরন, ক্রোমিয়াম, কপার, লেড, টিন, জিংক ও জৈব এসিড (যেমন-ম্যালিক এসিড, সাইট্রিক এসিড, টারটারিক এসিড এবং অক্সালিক এসিড), কতিপয় ভিটামিন, প্রোটিন, হরমোনস, এসিটাইল কোলিন, অ্যান্টিবায়োটিকস, ফাইটোনসাইডস, সাইস্টোস্ট্যাটিক্স এবং পানি (১৯-২১%) ছাড়াও ...

শিশুদের জন্য ঘি – এটা কি নিরাপদ?

ঘি-কে একটি শক্তিশালী সুবাসযুক্ত মাখন হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়। ধীরে ধীরে মাখনকে ফুটিয়ে প্রস্তুত করা হয় সব যতক্ষণ না সব জল বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং ফ্যাটটি পৃথক হয়ে যায়। এর পরে, এটি একটি সুগন্ধযুক্ত, পুষ্টিকর স্বাদ দিতে কয়েক মিনিটের জন্য হালকা আঁচে গরম করা হয়। ঘি পুষ্টির একটি ভাল উৎস। ঘি শিশুদের ডায়েট অন্তর্ভুক্ত করা হলে এটি শিশুদের জন্য খুব উপকারী। ঘিয়ের পুষ্টির মান ঘি ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৯-এর মত অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। এটি ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে-তে ভরপুর। ঘি তার অ্যান্টিমাইকোবালিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য পরিচিত। এটি শরীরের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে, ক্ষতিকারক মুক্ত র‍্যাডিকেল অপসারণ করতে সাহায্য করে। ঘি হজমে সাহায্য করে এবং অনাক্রম্যতা ও দৃষ্টিশক্তি উন্নত করার জন্য পরিচিত। ভিটামিন কে হাড়ের বিকাশের জন্য অপরিহার্য ক্যালসিয়াম উৎপাদনে সহায়তা করে। প্রতি টেবিল চামচ ঘিতে ১০৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ রয়েছে, যা দৈনিক প্রস্তাবিত পরিমাণের ১২ বা ১৫%। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ঘি শরীর থেকে কার্সিনোজেন অপসারণে সাহায্য করেছে। কার্সিনোজেন শরীরের ক্যান্সারের কারণ একটি রাসায়ন...

শীতে যেভাবে উপকার করে মধু

 প্রাকৃতিকভাবেই মধু নানা গুণের অধিকারী। এর রয়েছে একাধিক রোগ নিরাময়ের ক্ষমতাও। আর শীতে শরীরের উষ্ণতা বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়তা করে মধু। কেননা মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী একটি খাদ্য। দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে উষ্ণতা বাড়ায় মধু। তাই মধু খেলে শীত আপনাকে কাবু করতে পারবে না। শীতে মধু আরও যে উপকারগুলো করে এবার তা জেনে নিন.. ১. শীতে মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগে সর্দি-কাশিতে। তাই কুসুম গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে কাশির প্রকোপ কমবে। আর যারা অনেকদিন ধরে খুসখুসে কাশির সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন এক চামচ আদার রসের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে দ্রুত আরোগ্য হবেন। তবে এক বছরের কম বয়সী ছোট বাচ্চাদের মধু খাওয়াবেন না।  ২. শীতে পোড়া ও কাটাছেড়া সহজে ভাল হয় না। কিন্তু মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা ক্ষত, পোড়া ও কাটা জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। কোথাও পুড়ে বা কেটে গেলে ক্ষত স্থানে মধুর একটি পাতলা প্রলেপ দিয়ে দিন। ব্যথা কমবে ও দ্রুত নিরাময় হবে। ৩. শীতে পিঠা-পায়েশের সঙ্গে নানা খাবারের স্বাদ যায় বেড়ে, তাই খাওয়ার পরিমাণও যায় বেড়ে। তখন অনেকের হজমে সমস্যা   দেখা দেয়। এক গ্লাস কুসুম ...